বাংলাদেশের উন্নয়নে করণীয় কী?

সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি সবাই প্রার্থনা শেষে নাস্তা করে যার যার কাজে যাচ্ছে। কেহ অলস সময় কাটাচ্ছে না। অন্যের জন্য ক্ষতি ও কষ্টকর হয় এমন কাজ কেহ করছে না। রাস্তায় কোন যানজট নাই। পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও আবাসনের কোন সমস্যা নাই। সব কিছু পরিকল্পিতভাবে সাজানো গোছানো। যা দরকার সবই যেন হাতের কাছে। খুব সহজে ও দ্রুত সব সেবা পাওয়া যাচ্ছে।
 
সবাই সবার সাথে ভাল ও সুন্দর ব্যবহার করছে। একে অন্যের কল্যাণ কামনায় ব্যস্ত। ক্ষতি করার কথা কল্পনায়ও নাই। স্বাস্থ্য ও আইনের সেবা ফ্রি, শিক্ষার জন্য কোন অর্থ লাগে না। চারিদিকে সবুজের সমারোহ। ফুলে-ফলে ভরে আছে চতুর্দিক। পাখির মিষ্টি মধুর গানে মনটা জুড়ে যাচ্ছে। খাল-বিল, নদী-নালা ও সাগরের প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই চমৎকার ও দুষণ মুক্ত।
 
 ভাবছেন, কোন স্বপ্নের কথা বলছি। না, কোন স্বপ্নের কথা বলছি না। হ্যাঁ, এ ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরী করা সম্ভব। এ জন্য আমাদের সবার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে একটা কথা বলতে হবে, তাহলো, ‘হ্যাঁ’ অবশ্যই অবশ্যই এর জন্য যা করা দরকার তা সবই করে ছাড়বো, ইনশাল্লাহ।

             
বাংলাদেশের উন্নয়নে করণীয় কী?
বাংলাদেশের উন্নয়নে করণীয় কী? 



     বাংলাদেশের উন্নয়নে করণীয়  


(১)    সমগ্র দেশকে সুন্দর করে সাজাতে হবে।
(২)    প্রশাসনিক কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে।
(৩)    কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
(৪)    শিক্ষা ব্যবস্থা আধুনিক ও ফ্রি করতে হবে।
(৫)    বেতন বৈষম্য কমাতে হবে।
(৬)    আইনের সেবা ফ্রি করতে হবে।
(৭)    চিকিৎসা সেবা ফ্রি ও সমমানের করতে হবে।
(৮)    অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে।
(৯)    জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
(১০)    সকল প্রকার নেতিবাচক চিন্তা দূর করতে হবে।

 

 

(১) সমগ্র দেশকে সুন্দর করে সাজাতে হবেঃ 

বাংলাদেশের উন্নয়নে তথা দেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্য ও বেকার মুক্ত করতে হলে, সমগ্র দেশকে শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির মত সুন্দর করে সাজাতে হবে। যেভাবে সাজালে দেশের সকল মানুষ সহজে সকল নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাবে। যেমন দেশের কোথায় কোথায় আবাসন, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণাগার, হাসপাতাল, মার্কেট, কেন্দ্রীয় মসজিদ, উপসনালয়, পর্যটন স্পট, হোটেল-রেষ্টুরেন্ট, সুইমিংপুল, শরীর চর্চা কেন্দ্র, সরকারি অফিস ইত্যাদি হবে। আবার কৃষি জমি, বনভূমি ও কবরস্থান কোথায় হবে ইত্যাদি জিলা ভিত্তিক সাজাতে হবে।
 

তারপর সব জেলার কেন্দ্রস্থল রাজধানীকেও প্রয়োজন অনুসারে ঢেলে সাজাতে হবে। এলোমেলোভাবে রংয়ের ছড়াছড়ি করলে যেমন ছবি হয় না আর সুন্দরের তো প্রশ্নই আসে না। তেমনি দেশের সব কিছু থাকার পরেও সাজানো না থাকার কারণে কোন কিছুই যথাযথভাবে জনগণের কল্যাণে আসছে না। সুতরাং দেশকে যথাযথভাবে সুন্দর করে সাজাতে হবে। এরপর স্থানীয় ও কেন্দ্রীয়ভাবে শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ সিস্টেম চালু করতে হবে।
 

 

(২) প্রশাসনিক কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবেঃ

 আমাদের দেশের প্রশাসনিক কাঠামো:

আমাদের দেশের প্রশাসনিক কাঠামো মোটামুটি ভাবে প্রর্যায়ক্রমে এ রকম, প্রথমে মেম্বার, চেয়ারম্যান (ইদানিং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যান) এম. পি. (থানা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক) মন্ত্রী, প্রধান মন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট।
 

এতগুলি স্তরের জনপ্রতিনিধি বা শাসনকর্তা থাকায় জনগণ যার যার সুবিধামত কখনো উপর স্তরে আবার সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে নিচু স্তরে থাকায় নিম্ন স্তরের জনপ্রতিনিধির নিকট সুবিধা-অসুবিধা ও সাহায্য-সহযোগিতার জন্য প্রার্থী হয়ে থাকে। এতে কেহ লাভবান হয় আবার অনেকে ব্যর্থ হয়ে এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করে। কেউবা কোন উপায় না পেয়ে আত্মহত্যা করে আবার কেউবা প্রতিপক্ষের প্রতি হিংস্র আচরণ করে।
 

অতিরিক্ত জনপ্রতিনিধি বোঝা সরূপঃ

বর্তমান পদ্ধতিতে এত এত জনপ্রতিনিধি কিন্তু কেউকে দিয়ে মাঝে মাঝে কাজ হলেও অধিকাংশ সময়  কাউকে দিয়ে কোন কাজ হচ্ছে না। তাই অধিকাংশ জনগণ আশ্রয়স্থল হিসাবে প্রথমে পুলিশ তারপর আদালতকে বেছে নিচ্ছে। সেখানেও আছে অনেক অনেক ভোগান্তি ও হয়রানি। তাহলে এ ধরনের জনপ্রতিনিধি সৃষ্টি করার দরকার কি? এ পদগুলি সমাজের এক ধরনের আবর্জনা, যা মানুষের উপর বোঝা সরূপ।

 

প্রতিটি জেলায় একজন জনপ্রতিনিধিই যথেষ্টঃ 

প্রতিটি জেলায় একজন করে জনপ্রতিনিধি থাকলেই তো যথেষ্ট। তিনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাবেন। দেশের ৬৪টি জেলার ৬৪জন প্রতিনিধি সংসদে গিয়ে সমস্ত জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবেন। তারাই আইন রচনা ও আইন সংশোধন করবেন। জনগণের কোন অসুবিধা হলে জিলা প্রতিনিধিকে জানাবে এবং তা সমাধা করে নিবে। তিনি যদি ব্যর্থ হন তবে প্রেসিডেন্ট তার সমাধান করে দিবেন। 

 যিনি প্রেসিডেন্ট হবেন তিনি রাজধানীতে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবেন, আবার সকল জেলা প্রতিনিধিদের প্রধান হিসাবেও কাজ করবেন। তিনি তার শাসন কার্য যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য সমাজের গণ্যমান্য ও বিচক্ষণ লোকদের নিয়ে ছোট্ট একটা মন্ত্রীসভা গঠন করবেন। মুসলমানদের দীর্ঘ শাসনের ইতিহাসে এ ধরনের শাসন ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল।
 

 

(৩) কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবেঃ

জনগণকে ট্রেনিং দিতে হবেঃ

বাংলাদেশের উন্নয়নে দারিদ্র্য মুক্ত ও উন্নত দেশ গড়তে সকল কর্মক্ষম লোকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। সকল বেকার কর্মক্ষম লোকদের সামরিক বাহিনীতে ভর্তি করতে হবে। তারপর সেখানে সবার শিক্ষার পাশাপাশি আগ্রহ ও শারীরিক যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন বিষয়ে ট্রেনিং দিতে হবে।

 

প্রতিদিন সবাই কমপক্ষে ৬ ঘন্টা করবেঃ 

প্রতিদিন সবাই কমপক্ষে ৬ ঘন্টা দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কাজ করবে। যেমন কিছু লোক দিয়ে রাস্তাঘাট মেরামত, নির্মাণ ও পরিষ্কারের কাজ করানো হবে। আবার কিছু লোক দিয়ে আবাসন নির্মাণ, মেরামত ও দেখাশুনার কাজ করানো হবে। কিছু লোক কৃষি কাজ করবে। এভাবে দেশের সকল ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর যোগ্যতা সম্পন্ন কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণে লোকজনদের সাধারণ সিপাহী হিসেবে লেবারের মত কাজ করাতে হবে। 

 বর্তমানে অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে চেয়ার, টেবিল আসবাবপত্র সবই আছে কিন্তু কোন কাজ নেই, এমনটি রাখা যাবে না। প্রত্যেকের কমপক্ষে ৬ ঘন্টা কাজের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। সরকারি মানে সেবার মান খারাপ, এটা ধ্বংস করে উন্নত সেবার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে এবং যথাযথ তদারকীর ব্যবস্থা করতে হবে। বছরে ১/২ বার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যথাযথ উন্নত সেবার উপর টেনিং দিতে হবে। কোন প্রকার লুজ বা গাফিলতি মেনে নেয়া হবে না।

 

যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থান করতে হবেঃ

প্রতিদিন সবাই কমপক্ষে ৬ ঘন্টা কাজ করার পর বাকী ২ ঘণ্টা সময় পড়াশুনা ও যোগ্যতা অনুযায়ী ট্রেনিং নিবে। ট্রেনিং সমাপ্ত করার পর লোকদের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, আবাসন, রাস্তাঘাট, পুল-সেতু, খাল ও নদী খনন, কৃষিকাজ, মৎস চাষ, ডেইরী-পল্ট্রি, শিল্প, প্রতিষ্ঠান, কারখানা প্রভৃতি স্থানে নির্মাণ, পরিচালনা, উৎপাদন ও দেখাশুনার কাজে যথাযথভাবে সরকারি ভাবে কাজে লাগাতে হবে। ট্রেন্ডার সিস্টেম বাতিল করে সামরিক বাহিনীতে দেশের যোগ্য লোকদের নিয়োগ দিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণে সকল কাজ করানোর সিস্টেম চালু করতে হবে। 

 

বিদেশে সরকারিভাবে কর্মসংস্থান করতে হবেঃ

দেশে  যদি  সকল  লোকের  কর্মসংস্থান  করা  না যায়,  তবে  পৃথিবীর  বিভিন্ন  দেশের  সাথে  চুক্তিবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন প্রজেক্ট দেশের বাহিরে করতে হবে। আর শুধুমাত্র প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের বিদেশে সরকারিভাবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
বর্তমানে বেসরকারি খাতে সকল সেবামূলক কাজ চালু রাখা বা ছেড়ে দেয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এতে নাকি সেবার মান বাড়ে। একটা কথা মনে রাখা দরকার, বেসরকারি খাত সেবার সাথে সাথে তাদের লাভটাই বড় করে দেখবে দেশের লাভ-ক্ষতি তাদের কিছু আসে যায় না। তাই বেসরকারি নয় সরকারি সেবাতেই জনগণ ও দেশের মঙ্গল নিহিত।
 

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অর্থের যোগানঃ

কেহ কেহ বলেন, সরকার এতে কিছু করবে, এতে তো অনেক টাকার প্রয়োজন হবে। এত টাকা সরকার কোথায় পাবে? আমাদের কথা হলো, সরকার অর্থের জন্য প্রথমতঃ জনগণকে দেশ গঠনে উদ্বুদ্ধ করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে দানের উৎসাহ সৃষ্টি করে টাকা সংগ্রহ করবে। দ্বিতীয়তঃ দেশী-বিদেশী উৎস থেকে সহজ শর্তে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করবে। তৃতীয়তঃ দেশের বিভিন্ন উৎপাদনশীল খাতগুলিকে অর্থ উপার্জনের জন্য কাজে লাগাতে হবে। যেমন মৎস চাষ, কৃষিকাজ, ডেইরী-পল্ট্রি ইত্যাদি খাতে সরকারি ভাবে বিনিয়োগ করতে হবে।
 

মৎস খাতে উন্নয়নঃ

শুধুমাত্র মৎস খাতে পরিকল্পিত ভাবে সরকারি জলাভূমি যেমন খাল-বিল, নদী-নালা প্রয়োজন মত খনন ও সংস্কার করে এবং সাগরকে কাজে লাগিয়ে যে পরিমাণ অর্থ মাত্র দুই বৎসরে আয় করা সম্ভব তা দিয়ে সরকারের সকল খরচ মিটিয়ে সকল জনগণের জন্য বিল্ডিং করে আবাসনের ব্যবস্থা করা সম্ভব। এ দুই বছর সরকারি জলাভূমিতে কোন মাছ ধরা যাবে না। শুধুমাত্র ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর, ডোবা ও জলাভূমি থেকে মৎস আহরণ করা যাবে।

 এ সময় প্রয়োজনে বিদেশ থেকে মাছ আমদানী করবে। সকল জেলেদের নৌবাহিনীর সাধারণ সিপাহী হিসাবে নিয়োগ দিয়ে তাদের পড়া-লেখা, মাছ ধরা ও সিপাহীর ট্রেনিং দিতে হবে। কোন লোক সরকারি জলাভূমিতে মাছ ধরার চেষ্টা করলে সোজা ফায়ার করা হবে, কোন ছাড় নাই, ডেট বডিটা ওখানেই দাপন করা হবে। সর্বক্ষণ নৌবাহিনীর  সিপাহীগণ সরকারি জলাভূমিতে টহল দিতে থাকবে।


কৃষি খাতে উন্নয়নঃ

কৃষকদের সামরিক বাহিনীতে নিয়ে তাদের পড়া-লেখা শেখা, কৃষি কাজ করা ও সামরিক ট্রেনিং দিয়ে সরকারি ভাবে সকল জমি চাষের ব্যবস্থা করতে হবে। জমির মালিকগণ সকল জমির দলিলের ১সেট ফটোকপি সরকারের নিকট গচ্ছিত রাখবে। ফসল উঠলে খরচ ও টেক্স বাদে জমি অনুযায়ী ফসল পাবে। 

বিচ্ছিন্নভাবে চাষ করতে গিয়ে দেখা যায় কৃষক বুঝতে পারে না, কোন সময় কোন জমিতে কি প্রয়োজন অথবা বুঝলেও ব্যক্তি পর্যায়ে অনেক সময় তা সমাধান করা সম্ভব হয় না। তাই সরকারি ভাবে জমিতে চাষাবাদ ও গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী ইত্যাদির খামার করে শস্য ও মাংস, দুধ, ডিম উৎপাদন করতে হবে। যা থেকে আসবে অনেক অনেক এবং অনেক অর্থ। তাহলে সরকারের অর্থের অভাব কোথায়। অভাব থাকলে বুদ্ধিমত্তা ও সাহসেরই অভাবে থাকতে পারে।
 

 

(৪) শিক্ষা ব্যবস্থা আধুনিক ও ফ্রি করতে হবেঃ 

বাংলাদেশের উন্নয়নে শিক্ষা ব্যবস্থায় সকল এলোমেলো নীতি ও পদ্ধতি বন্ধ করে এক মুখি শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যেমনঃ আলিয়া মাদ্রাসা, কাওমী মাদ্রাসা, ইংলিশ মিডিয়াম, বাংলা মাধ্যম, ক্যাডেট সিস্টেম ইত্যাদি এত সব কিছুর রাখা যাবে না। এক মুখি শিক্ষা নীতি চালু করতে হবে। এতে থাকবেঃ
১। বাংলা ১০০+১০০    = ২০০ নাম্বার
২। ইংরেজী ১০০+১০০    = ২০০ নাম্বার
৩। আরবী ১০০+১০০ = ২০০ নাম্বার
৪। অংক  = ১০০ নাম্বার
৫। সমাজ বিজ্ঞান  = ১০০ নম্বর
৬। ইতিহাস = ১০০ নাম্বার
৭। সাধারণ জ্ঞান= ১০০ নাম্বার (আধুনিক বিশ্ব,বক্তৃতা, খেলাধুলা ইত্যাদি)
 

বিঃ দ্রঃ মুসলিম ছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বী ছাত্র-ছাত্রীরা আরবীর বিকল্প ২০০ নাম্বারের ইসলাম অথবা তাদের ধর্মীয় বিষয় নিতে পারবে।
 

এ ধরনের এক মুখি শিক্ষার উদ্দেশ্য সবাইকে অলরাউন্ডার করার চেষ্টা করা হবে। কেহ শুধু এক দিকেই জানবে আর অন্য সব দিকে অন্ধকারে থাকবে তা হতে দেয়া যাবে না। ১ম শ্রেণী থেকে একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সবার একই রকম বাধ্যতামূলক শিক্ষা অর্জন করতে হবে। এরপর বিষয় ভিত্তিক জ্ঞান অর্জনের সুযোগ দেয়া হবে।
শিক্ষার ক্ষেত্রে আরো কয়েকটি কাজ করতে হবে:
 

১।শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ফ্রি করতে হবে। শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কোন প্রকার অর্থ লেন-দেন করা চলবে না।
২। একাদশ শ্রেণীর পর দ্বাদশ শ্রেণীতে প্রয়োজনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হোষ্টেলে ফ্রি খেয়ে ও থেকে ৩/৪ বছর বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশুনা ও ট্রেনিং নিয়ে দেশের যে কোন একটা ক্ষেত্রে কাজ করার যোগ্যতা অর্জন করবে।
৩। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষা ছাড়া অন্য কোন কিছু করতে দেয়া যাবে না। যদি কোন কিছু করতেই হয় তবে শিক্ষাঙ্গনের বাহিরে গিয়ে করতে হবে।
৪। গড়ে ৫০% নাম্বার পেলে উত্তীর্ণ ধরা হবে।
 

 

(৫) বেতন বৈষম্য কমাতে হবেঃ 

বাংলাদেশের উন্নয়নে সমাজের আর্থ-সামাজিক বৈষম্য কমাতে ও দারিদ্র্য বিমোচন সহজ করতে বেতন বৈষম্য কমাতে হবে। সর্ব নিম্ম ও সর্বোচ্চ বেতনের পার্থক্য ১:২ হতে পারে। যা রাসূল সঃ ও খোলাফায়ে রাশেদার শাসনামলে বিদ্যমান ছিল। বর্তমানে দেশে সরকারি পর্যায়ে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের অনুপাত ১: ৯.৭৫  আর ২০টি গ্রেড রয়েছে। বেতনের এ অনুপাত ও গ্রেড দু’ই কমাতে হবে।
বেতন নির্ধারণ করতে হবে, কাজের ভিত্তিতে নয়, শিক্ষা ও দায়িত্বের ভিত্তিতে। একজন এম. এ. পাশ লোকও রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করতে পারে, এতে কাজের মান কম শিক্ষিত লোকের চেয়ে ভাল হবে। অর্থাৎ পেশাগত কাজের মান উন্নত করতে শিক্ষার ভিত্তিতে বেতন নির্ধারণ করতে হবে। আর প্রতিটি কাজের জন্য ট্রেনিং বাধ্যতামুলক করতে হবে।
 

বেতন কাঠামোঃ 

বেতনের কাঠামো এ ধরনের হতে পারে, যেমন-
১। শূন্য থেকে ৮ম শ্রেণী পাশ  - ১০০০০ টাকা
২। ৯ম, ১০ম ও একাদশ শ্রেণী পাশ - ১২০০০, ১৪০০০ ও ১৬,০০০ টাকা
৩। দ্বাদশ শ্রেণী পাশ  - ১৮,০০০ টাকা
৪। ত্রয়াদশ শ্রেণী বা এম. এ. বা সমমান পাশ - ২০,০০০ টাকা
৫। জন প্রতিনিধি (এম. এ. বা সমমান পাশ)  - ২০,০০০ +৫০০০ চার্জ এলাউন্স =২৫০০০ টাকা
৬। প্রেসিডেন্ট (এম. এ. বা সমমান পাশ) - ২০০০০ টাকা + চার্জ এলাউন্স ১০০০০ টাকা = ৩০,০০০ টাকা
বিঃ দ্রঃ দায়িত্ব প্রাপ্তরা বেতন+চার্জ এলাউন্স পাবে।
 

যদি সমাজের সকল লোক ত্রয়াদশ শ্রেণী বা এম. এ. বা সমমানের যোগ্যতা অর্জন করে, তবে সবাই ঐ মানের বেতন পাবে। যেমন- একজন সুইপার এম. এ. পাশ করলে ঐ মানের বেতন পাবে।
এতে কাজের গুনগত মান উন্নত হবে। সবাই ভাই-বন্ধু হিসাবে মিলে মিশে সকল কাজ সমাধা করবে। ছোট কাজ বা বড় কাজ বলতে কোন কিছু থাকবে না। নিচু শ্রেণী বা উচ্চ শ্রেণী বলতে কোন শ্রেণী থাকবে না। সবার পরিচয় হবে শ্রমিক।

 

 

(৬) আইনের সেবা ফ্রি করতে হবেঃ 

দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নত জীবন-যাপন নিশ্চিত করতে আইনের সেবা ফ্রি দিতে হবে। বর্তমান সিস্টেমে আইনের সেবা পেতে গিয়ে অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছে। এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। মুসলমানদের দীর্ঘ শাসনের ইতিহাসে আইনের সেবা ফ্রি ছিল।
 

 

(৭) চিকিৎসা সেবা ফ্রি ও সমমানের করতে হবেঃ

বাংলাদেশের উন্নয়নে দেশের সকল নাগরিকের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য সেবা ফ্রি ও সমমানের করতে হবে। যে বিছানাতে কিছুক্ষণ আগে প্রেসিডেন্ট চিকিৎসা নিয়েছে, সেই বিছানাতে একজন সাধারণ লোক এখন চিকিৎসা নিচ্ছে, এ ধরনের সমমানের সেবা নিশ্চিত করতে হবে, যা বর্তমানে কানাডাতে রয়েছে। বর্তমান সিস্টেমে গরীবের চিকিৎসা সেবা অনিশ্চিত। চিকিৎসা নিতে গিয়ে অনেকে নিঃস্ব হয়েছে, এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। প্রতিটি জেলায় একটি করে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল নির্মাণ ও সুষ্ঠ পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে এবং একই স্থানে সকল প্রকার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসা সেবা নিতে এসে রোগীকে যাতে এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করতে না হয়, সেজন্য রোগীর সকল দায়িত্ব গেট থেকে শেষ পর্যন্ত হাসপাতাল প্রশাসনের উপর ন্যস্ত থাকবে।
 

 

(৮) অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবেঃ 

বাংলাদেশের উন্নয়নে দারিদ্র্য বিমোচন,কর্মসংস্থান ও উন্নত জীবন যাপন নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরী করতে হবে। উন্নয়নের কেন্দ্র বিন্দু হবে জিলা শহর। জিলা শহরকে কেন্দ্র করে প্রয়োজন মত স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, পাঠাগার, গবেষণাগার, আবাসন, হাসপাতাল, মার্কেট, গোডাউন, কেন্দ্রীয় মসজিদ, উপাসনালয়, পর্যটন স্পট, হোটেল-রেষ্টুরেন্ট, রেষ্ট হাউজ, ময়লার স্পট, সুইমিংপুল, শরীর চর্চা কেন্দ্র, সরকারি অফিস ইত্যাদি নির্মাণ করতে হবে।
 

রাস্তাঘাটঃ

রাস্তাঘাট আধুনিক ভাবে নির্মাণ করতে হবে। আর তাহল জেলা থেকে জেলা সংযোগ সড়কগুলি হবে ৫০+৫০ =১০০ ফুট প্রশস্ত, সাথে দুই পাশে ৫ ফুট করে ফুটপাত। আর বিভাগীয় শহর থেকে রাজধানীর সাথে সংযোগ সড়ক হবে ১০০+১০০=২০০ ফুট প্রশস্ত, সাথে দুই পাশে ১০ ফুট ফুটপাত। সকল প্রকার লাইন যেমনঃ পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ সুয়ারেজ লাইনসহ সকল লাইন ফুটপাতের নীচ দিয়ে নিতে হবে। অর্থাৎ ফুটপাত হবে বক্স সিস্টেম। যাতে এসব লাইনের প্রয়োজনে কোন সময় রাস্তা খনন করতে না হয়। উভয় রাস্তার দু’পাশে ১০ ও ১৫ ফুট জায়গা গাছ লাগানোর জন্য রাখতে হবে। আধুনিক ব্যবস্থাপনায় রাস্তাগুলি যানজট ও দুর্ঘটনা মুক্ত করা হবে।

 

আবাসনঃ

কোন জেলার সকল লোক যাতে বিল্ডিং এ বসবাস করতে পারে এই পরিমাণ আবাসন তৈরী করতে হবে।  বিল্ডিং হবে ৬ (ছয়) তলা এবং ৪ ইউনিটের, ১টি লিপ্টের ব্যবস্থা থাকবে। নীচতলায় থাকবে গ্যারেজ। প্রতিটি ইউনিট হবে ১০০০ স্কয়ার ফুট। বিল্ডিং থেকে বিল্ডিং এর দুরত্ব হবে ৫০ ফুট যাতে সহজে বায়ু চলাচল করতে পারে। আবাসন এলাকা সকল নাগরিক সুবিধাসহ সুন্দর করে সাজানো হবে।
 

কৃষিভূমিঃ

জেলার কৃষিভূমি নির্ধারণ করতে হবে। কেহ এর ভিতর আবাসন বা অন্য কিছু তৈরী করতে পারবে না, শুধুই চাষাবাদ করা হবে। সরকার নিয়ন্ত্রণে চাষাবাদ হবে এবং জমির পরিমাণ অনুযায়ী মালিকদের মধ্যে ফসল বন্টন করা হবে। দেশের চাহিদা নিরুপণ করে পরিকল্পিতভাবে কৃষি পণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও সুশৃঙ্খল বিপণন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই সহজ কাজ।

 

খাল-নদীঃ  

 জেলার সকল খাল-নদী খনন ও প্রয়োজন মত সংস্কার করে এর সীমা নির্ধারণ করতে হবে। খাল ও নদীর পাড় যাতে না ভাঙ্গে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এরপর এগুলিতে উন্নত পদ্ধতিতে মাছ, হাঁস ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর চাষ করা হবে।
 

বনভূমিঃ

প্রতিটি জেলার নির্দিষ্ট এলাকা বনভূমি হিসাবে সংরক্ষণ করা হবে। তাতে বন্য পশু-পাখি ও অন্যান্য জীব জন্তুর জন্য অভয়াশ্রম গড়ে তোলা হবে।

 

শিল্প প্রতিষ্ঠানঃ

বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রত্যেক জেলায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শিল্পের কাঁচা মালের সরবরাহ ও দেশের চাহিদা অনুযায়ী শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলো হবে এবং প্রয়োজনে কাঁচা মালের উৎপাদন বাড়িয়ে সরবরাহ বাড়ানো হবে। যেমন কোন এলাকায় পাট উৎপাদন বেশি হলে সেই এলাকায় পাটের মিল স্থাপন করা হবে। আবার কোন এলাকায় দুধ উৎপাদনের সম্ভাবনা থাকলে সেখানে ডেইরী ফার্ম স্থাপন করে দুধ ভিত্তিক শিল্প স্থাপন করা হবে। শিল্প স্থাপনের জন্য জেলার  পতিত জমি অথবা অপেক্ষা কৃত কম উর্বর জমি বেচে নেয়া হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি সকল প্রকার দুষণ মুক্ত করা হবে এবং শ্রমিকদের কাজের উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।
 

বিদ্যুৎঃ

 বিদ্যুৎ হল উন্নয়নের চালিকা শক্তি। বিদ্যুৎ ছাড়া সব অচল। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রচালিত পদ্ধতির সাথে আরো নতুন নতুন পদ্ধতি যোগ করা হবে। যেমন অটো বিদ্যুৎ যার ব্যবহার পরীক্ষা মুলক হয়েছে। সৌর বিদ্যুৎ, স্প্রিং-এর সাহায্য বিদ্যুৎ উৎপাদন যা ঘড়ির মত ছাবি দিলে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, বায়ু চালিত বিদ্যুৎ ও তাপ বিদ্যুৎ এ গুলির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইউনিট ও বড় কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। (ঠাকুরগাঁয়ের ভূগর্ভে অফুরন্ত তাপশক্তি একটি দৈনিকের ০৬.০৬.১০ইং তারিখের রিপোর্ট)। এছাড়াও আরো অন্যান্য উপায় খোঁজার জন্য গবেষণাগার নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি সফল পরীক্ষাই দ্রুত বাস্তবায়নের সকল ব্যবস্থা করা হবে এবং সকল ধরনের বিজ্ঞানীদের সর্বোচ্চ সুবিধা সহ পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।
 

(৯) জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবেঃ

জনসংখ্যা সকল দেশের একটি বড় সম্পদ। কিন্তু অতিরিক্ত জনসংখ্যা এবং অপরিকল্পিতভাবে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি যে কোন দেশের জন্য অভিশাপ। অপরিকল্পিত ভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দেশের সকল সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে চাপ বৃদ্ধি পায়। যেমনঃ স্কুল, কলেজ, আবাসন, হাসপাতাল, পরিবহন, কর্মসংস্থান সহ সর্বত্রই অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপের নেতিবাচক ফল দেখা যায়। তাই পরিকল্পিত পরিবার গঠনের মাধ্যমে জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করতে হবে।  

জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করার কয়েকটি উপায় হলো, যেমন-
(১) শিশু জন্ম দেয়ার প্রতি নিরুৎসাহিত করতে হবে। 

(২) শিশুর অধিকারের উপর ব্যাপক প্রচারণা ও তা আদায়ে কঠোরতা আরোপ করতে হবে।

যেমনঃ (ক) শিশুর প্রতি যে কোন ধরনের অবহেলার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
 

(খ) সামর্থ্য না থাকার পরেও শিশু জন্ম দেয়া তারপর মৌলিক অধিকার পুরণ করতে না পারা এবং নিষ্ঠুর ও খারাপ আচরণ করার জন্য জরিমানা অথবা শারীরিক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
 

(৩) অনাকাংখিত গর্ভধারনের কারণে গর্ভপাত সেবা বিনামূল্যে দিতে হবে। অর্থাৎ বিনামূল্যে পেট পরিষ্কার কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। অথবা জন্মের পরপরই ছাটাই বা delete করার ব্যবস্থা করতে হবে।
 

(৪) জন্মনিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক পদ্ধতি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
 

(৫) নিঃসন্তান বা সন্তান না নিলে দম্পতিদের পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে।
 

 

(১০) নেতিবাচক চিন্তা দূর করতে হবেঃ

সকল প্রকার নেতিবাচক চিন্তা দূর করতে হবে। 

  চিন্তার ধরনঃ

মানুষের মধ্যে দুই ধরনের চিন্তা বা মনোভাব কাজ করে। (১) ইতিবাচক মনোভাব (২) নেতিবাচক মনোভাব। ইতিবাচক মনোভাব যে কোন জয় বা অর্জন করতে এবং এর জন্য কি কি বাধা বা সমস্যা হতে পারে তা চিহ্নিত করে সহজ সমাধান ঠিক করতে সাহায্য করে এবং সমস্যাগুলি তুচ্ছ বা ছোট-খাট মনে হবে।

 আর নেতিবাচক চিন্তার দ্বারা কোন কিছু জয় বা অর্জন করা সম্ভব নয় এবং সমস্যাগুলি বড় মনে হবে। আর মানসিকভাবে দুর্বলতা দেখা দিবে ও সব সময় ভয় ভয় লাগবে। তাই সবাইকে নেতিবাচক চিন্তা অবশ্যই অবশ্যই পরিহার করে ইতিবাচক চিন্তার চেষ্টা চালাতে হবে।
 

হ্যাঁ, আমরা করবো জয়, দেখা হবে বিজয়ে, রবিন্দ্র নাথ বলেছেন,"যদি তোর ডাক শুনে না আসে, তবে একলা চলরে" ইত্যাদি কথা ইতিবাচক।
আর না, অনেক বড় কাজ, সহজ নয়, পরিবেশ খারাপ ইত্যাদি কথা নেতিবাচক।

 

বুদ্ধিমানের চিন্তাঃ

বুদ্ধিমানেরা ইতিবাচক চিন্তা করে এবং কঠিন কাজও সহজে করে। আর বুদ্ধিহীন, লুজ, ইস্কু ঢিলা, তার ছিড়া লোকেরা নেতিবাচক চিন্তা করে এবং সহজ কাজেও জটিলতা সৃষ্টি করে আর মশা মারতে কামান দাগায়। অন্য দিকে বুদ্ধিমানেরা কামান ধ্বংসে মশা কাজে লাগায়।

মালয়েশিয়ার মাহাথিরের মেয়ে বাংলাদেশ সফরে আসার পর সাংবাদিকরা তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে, আপনার পিতার সফলতার পেছনে কোন জিনিস কাজ করেছিল? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “আমার বাবার ডাইরিতে ‘না’ বলতে কোন কথা নাই। তার চিন্তা ভাবনা ছিল ইতিবাচক।”
 

পরের সুখের জন্য নিজের সুখ বিসর্জন দেয়ার মানসিকতাও ইতিবাচক চিন্তা থেকে আসে। দেশের অবস্থা ভাল হলে সবার সাথে সাথে আপনার-আমার অবস্থাও ভাল হবে। আর তাই আত্মকেন্দ্রিক নেতিবাচক চিন্তা পরিহার করে সমাজের সবার কথা চিন্তা করে ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে সবার এগিয়ে আসতে হবে।
 

পরিশেষে বলবো, বর্তমানে আমরা যে জীবন-যাপন করছি তা অস্বাভাবিক কারণ চতুর্দিকের পরিবেশ এতই কঠিন যে, কোন সুস্থ্য লোকের পক্ষে বেশি দিন সুস্থ্য থাকা সম্ভব নয়। এই পরিবেশে বেঁচে থাকা মানে, ‘না মরে বেঁচে থাকা’। মানসিকভাবে অসুস্থ্য লোক এই পরিবেশ পরিস্থিতি মেনে নিলেও কোন সুস্থ্য লোক তা মেনে নিতে পারে না। এক গ্লাস পানি খেতে গেলেও তাতে রয়েছে কেমিক্যাল বা ভেজাল। প্রাকৃতিক ভাবে বিশুদ্ধ পানি দেয়া হয় ক্ষেতে ও মাঠে। ঝর্ণার পানি যাচ্ছে সমুদ্রে। আর পঁচা পানি কেমিক্যাল ও ফিল্টার দিয়ে পরিষ্কার করে খাওয়ানো হচ্ছে।
 

মানসিকভাবে সুস্থ্য লোকদের অবশ্যই অবশ্যই সবাইকে নিয়ে এই পরিবেশ পরিবর্তন করে নতুন, সুন্দর ও সহজ-সরল পরিবেশ সৃষ্টি করতে উদ্যোগ নিতে হবে এবং সকলের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি করতে হবে। আর তাই আমরা সবাই বলি, ‘হ্যাঁ’ অবশ্যই অবশ্যই আমরা ইহা বদলে নতুন পরিবেশ সৃষ্টি করবো। যেখানে থাকবে না কোন বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি, শোষণ-বঞ্চনা, জুলুম-নির্যাতন ও হয়রানি।
 

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বাংলাদেশের উন্নয়নে জনগণের জন্য বুদ্ধিমানের মত কাজ করার তৌফিক দান করুন,আমিন।
                                                          ===== ০ =====
 

FAQ:

১। বাংলাদেশের উন্নয়নে দেশকে সাজাতে হবে কি না?

উত্তরঃ হ্যাঁ, অবশ্যই দেশকে সাজাতে হবে।

২। বেতন বৈষম্য কত হওয়া উচিত?

উত্তরঃ ১ঃ২ হওয়া উচিত। যা রাসুল সঃ ও খোলাফায়ে রাশেদার আমলে কার্যকর ছিল।

৩। বাংলাদেশের উন্নয়নে শিক্ষা ব্যবস্থা একমুখী হওয়া উচিত কি না?

উত্তরঃ হ্যাঁ, বাংলাদেশের উন্নয়নে শিক্ষা ব্যবস্থা একমুখী হওয়া উচিত।

৪। বাংলাদেশের উন্নয়নে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে করতে হবে কিনা?

উত্তরঃ হ্যাঁ, বাংলাদেশের উন্নয়নে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে করতে হবে।

৫। উন্নয়নের জন্য নেতিবাচক চিন্তা দূর করা দরকার কিনা?

উত্তরঃ হ্যাঁ, উন্নয়নের জন্য নেতিবাচক চিন্তা দূর করা দরকার।



রচনা ও প্রস্তাবনা: মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম
মোবাইল নাম্বার: ০১৯১৭-৫১২৩৯৪
প্রথম প্রকাশকাল: ১লা ফেব্রুয়ারি-২০১১

 







একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ